চা পাতার পাইকারী বাজার ও মার্কেট সমন্ধে আজ আপনাদের ধারনা প্রদান করব। যে বিষয়গুলো জানার পর আপনাদের চা পাতার ব্যবসা বা চা পাতার প্যাকেট ব্যবসা করার সুবিধা হবে এবং চা পাতার পাইকারি বাজার সমন্ধে একটু হলেও আইডিয়া হবে। আপনি হয়তো জানেন চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল ও সিলেট। তাই সেখানে সব থেকে বড় বাজার, আসলে বিষয়টি মোটেই সঠিক নয়। চা উৎপাদন ও বিপনন সমপূর্ণ আলাদা। বাংলাদেশে সব থেকে বেশি চা উৎপাদন হয় মৌলভীবাজার জেলায়। আর চায়ের উৎপাদনের ২য় অবস্থানে রয়েছে পঞ্চগড় ও উত্তর অঞ্চলের জেলা ও চা উৎপাদনের ৩য় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা। কিন্তুু চা বাগান চা উৎপাদন করার পর তা সরাসরি বিক্রি করতে পারে না। চা বিক্রি করার জন্য চায়ের নিলাম এ চা তুলতে হয়। সেখান থেকে বাংলাদেশ চা বোর্ড এর লাইসেন্সপ্রাপ্ত চা ব্রোকার্স এর মাধ্যমে নিলাম সমপন্ন হয়।
বাংলাদেশের চায়ের পাইকারী বাজার কোথায়
বাংলাদেশের চায়ের পাইকারি বাজার বলতে সারাদেশেই বোঝায়। চায়ের নিলামে অংশগ্রহন করে বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেক জেলার বিডারগন। কিন্তুু বাংলাদেশে চায়ের নিলামকেন্দ্র ৩ টি রয়েছে। সেখানে প্রতি সপ্তাহে ও পনেরো দিন পর পর নিলাম সমপন্ন হয়। বাংলাদেশের চা নিলামকেন্দ্র সমূহ হল:
- চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্র
- পঞ্চগড় চা নিলাম কেন্দ্র
- শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্র
এখানে চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রে প্রতি বুধবার চায়ের নিলাম সমপন্ন হয় শ্রীমঙ্গল ও পঞ্চগড় চা নিলামকেন্দ্রে প্রতি মাসের প্রথম মঙ্গলবার ও বুধবার ও শেষ মঙ্গলবার ও বুধবার চায়ের নিলাম সমপন্ন হয়। বাংলাদেশে সর্বমোট এক্টিভ চা ব্রোকার্স রয়েছে ১৩ টি। তাদের মাধ্যমেই মূলত চায়ের নিলামগুলো সমপূর্ণ হয়ে থাকে।
চায়ের নিলামে অংশগ্রহন করে দেশের বিভিন্ন চায়ের বিডার্স, মূলত চায়ের বিডার্স হতে হলে আপনাকে বাংলাদেশ চা বোর্ড এর বিডার লাইসেন্স গ্রহন করতে হয় ও এ্যাসোসিয়েশন এর সদস্যপদ গ্রহন করতে হয়। তারপর আপনি চায়ের নিলাম এ অংশগ্রহন করতে পারবেন।
চট্টগ্রাম চায়ের পাইকারি বাজার
বাংলাদেশের সব থেকে পুরাতন চায়ের পাইকারী বাজার হচ্ছে চট্টগ্রামে। সেখানে মূলত নিলাম হাউজ হওয়ার পর পরেই শত শত ব্যবসায়ী ও উদ্দ্যোক্তা তৈরী হয়েছিল। তারা চা ব্যবসাকে ঐতিহ্যের সহিত দেখে থাকে। বর্তমানে সব ব্যবসা অনলাইনে হওয়ার কারনে তেমন আগের অবস্থানে এই চা ব্যবসা নেই। তবে কিছু কিছু ভাল ও সৎ ব্যবসায়ী তারা এই চা ব্যবসাকে ধরে রেখেছে।
শ্রীমঙ্গল চায়ের পাইকারি বাজার
আমরা জানি বাংলাদেশের সব থেকে বড় চা উৎপাদনকারী অঞ্চল হচ্ছে মৌলভীবাজার। চা উৎপাদনের কারনে ব্যবসায় সংস্কৃতিতে শ্রীমঙ্গলে গড়ে উঠেছে পাইকারি চায়ের বাজার। তবে এখানে সরাসরি বাগানের চা বলে কেউ বিক্রি করলে সমপূর্ণ ভুল হবে। কারন নিলাম ছাড়া চা বিক্রি করা অসম্ভব ও আইননত দন্দনীয় অপরাধ। শ্রীমঙ্গলে রয়েছে শত শত পাইকারী চায়ের দোকান ও টি হাউজ। তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চায়ের পাইকারি মূল্যে বিক্রয় করে থাকে।
পঞ্চগড় চায়ের পাইকারি বাজার
সমতলের প্রবেশদ্বার সবুজ চায়ের সমাহার শ্লোগানেই বোঝা যায় পঞ্চগড়ে রয়েছে সমতলের চা। এখানেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্গানিক চা বিপিনবিহারী কাজি এন্ড কাজি টি এস্টেট ও গুনগতমানের টিভি এর চা উৎপাদনকারী এম এম টি এস্টেট অবস্থিত। চায়ের ২য় উৎপাদন অঞ্চল হচ্ছে এই পঞ্চগড় সহ উত্তর অঞ্চলের সব জেলা। এখানে রয়েছে বিভিন্ন চায়ের পাইকারি মার্কেট ও দোকান। এখান থেকেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাইকারি চা বিক্রি করে থাকে।
কোথায় থেকে চা ক্রয় করলে লাভবান হবেন
আসলে চা ক্রয় করলেই হবে না। পাইকারি দামে চা ক্রয় করতে গেলে আপনাকে যে কোন জায়গা থেকেই চা ক্রয় করতে পারেন। এখন সারাদেশেই রয়েছে চায়ের বিডার্স। যারা প্রতি সপ্তাহে নিলাম থেকে চা ক্রয় করে থাকে। আপনি যে কোন বিডার্স এর থেকে চা ক্রয় করুন। মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী চা ক্রয় করবেন। আপনি যেখান থেকে দাম কমে ও ভাল মানের চা পাবেন সেখান থেকেই ক্রয় করুন। আপনি আমাদের থেকেও ক্রয় করতে পারেন।